বিজয়ের মাসে বাংলাদেশ 5G যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ১২ ডিসেম্বর দেশে ফাইভজি প্রযুক্তি সেবা উদ্বোধন করবেন। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক। প্রাথমিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ট্রায়াল ভিত্তিতে 5G চালু করুন।
বুধবার (ডিসেম্বর) রাজধানীর রমনায় কাউন্সিল হলে ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আওয়ামী লীগের উপ-কমিটি আয়োজিত ‘ফাইভজি: দ্য ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আব্দুস সবুর। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাহাব উদ্দিন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। উপ-কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. রনক আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকারের 2016 সালের নির্বাচনী ইশতেহারে 2021 থেকে 2023 সালের মধ্যে বাংলাদেশে সর্বাধুনিক মোবাইল প্রযুক্তি সেবা 5G চালু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় একমাত্র মোবাইল অপারেটর টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। ডাক ও টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর এবং বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী প্রাথমিক পর্যায়ে বিদ্যমান 4জি নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত হয়ে আগামী ডিসেম্বরে সীমিত পরিসরে 5G চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রথমত, ঢাকা শহরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সীমিত 5G পরিষেবা চালু করা হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে এই সেবা প্রসারিত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফাইভজি প্রযুক্তি সেবা গ্রাহকের মোবাইল ব্রডব্যান্ড ও ভয়েস কলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে, শিল্প, সরকার এবং এন্টারপ্রাইজ এবং ইউটিলিটি পরিষেবা প্রদানকারীরা ক্রিটিক্যাল মিশন পরিষেবা, স্মার্ট গ্রিড, স্মার্ট সিটি, আইওটি ব্যবহার করে স্মার্ট ফ্যাক্টরি, হিউম্যান টু মেশিন, মেশিন থেকে মেশিন ডিভাইসের সুবিধা নিতে সক্ষম হবে। মুজিব বছরে এটি একটি বিশাল উদ্যোগ। 5G প্রযুক্তির মাধ্যমে, মোবাইল গ্রাহকরা আরও ভাল মানের ভয়েস কল এবং 4G থেকে 20 গুণ দ্রুত মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ফাইভজির মাধ্যমে সড়কে চালকবিহীন যানবাহন চলবে। আমরা আশা করি 5G চালু হলে কল ড্রপের সংখ্যা কমে যাবে। মানুষ এবং ডিভাইসের মধ্যে শূন্য দূরত্ব সংযোগ তৈরি করা হবে। বিগডাটা, ফাইভজি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 5G চালু হলে চিকিৎসা ও শিক্ষা খাতে আমূল পরিবর্তন আসবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা অগমেন্টেড রিয়েলিটির অভিজ্ঞতা 5G কল্যাণের জন্য সহজ হবে। ফেসবুক সহ বিশ্বের সমস্ত বড় কোম্পানি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং মেটাভার নিয়ে কাজ করছে, যা অদূর ভবিষ্যতে প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী প্রযুক্তি হবে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের তরুণদের কাছে এসব প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চান। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাংলাদেশকে ডিজিটাল করার লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার ২০১৩ সালে থ্রিজি প্রযুক্তি সেবা এবং ২০১৬ সালে চতুর্থ প্রজন্মের টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি বা ফোরজ সেবা চালু করে, যার ধারাবাহিকতায় আমরা ৫জি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। করোনা 2020 সালে সারাদেশে লকডাউনে ছিল, শিক্ষার্থীরা 3G/4G প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে ক্লাস নিতে পারছে, ডাক্তাররা বাড়িতে চিকিৎসা দিতে পারছে, এবং বিচার বিভাগ অনলাইনে তাদের বিচারিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেত্রী ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি তার সূচনা বক্তব্যে। আবদুস সবুর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তিগত অবকাঠামো নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং সরকারী সেবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন যাতে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠা আমাদেরকে প্রযুক্তিভিত্তিক জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে অনুপ্রাণিত করে। আমরা স্বপ্ন দেখি প্রধানমন্ত্রী ও তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে ভবিষ্যতে শুধু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কূটনীতি নয়, বিজ্ঞান কূটনীতি ও প্রযুক্তিগত কূটনীতিতেও নেতৃত্ব দেবে। আর এর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।